এ জগৎ তোমার নয়
প্রস্তাবনা
একবিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে যায় অনেক। শতাব্দীর গোড়ার দিকেই মানুষ তৈরি করে সুপার কম্পিউটার। যা এক সময় কল্পনার অতীত ছিল, বাস্তবে তাই সম্ভব করে মানুষ। কিন্তু সেই কল্পনার মধ্যে একটি ভয়ের ব্যাপারও ছিল যা নিয়ে তখন মানুষ তেমন একটা মাথা ঘামায়নি। কি সেটা? সেটা ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হুমকি হয়ে ওঠার বিষয়।
সুপার কম্পিউটার দিয়ে মানুষ তার দৈনন্দিন এবং ভবিষ্যতের সেবার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগাতে থাকে। একটা সময় আসে যখন সে সব তৈরিতে মানুষ নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেই কাজে লাগাতে থাকে। কেননা, গবেষণার গোড়ার দিকে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিকে পর্যবেক্ষণ করার কাজে সুপার কম্পিউটারকে লাগানো হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মার্কেটিং ও বাণিজ্য। মানুষের মনের জানালা ধরে প্রত্যেকের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আগ্রহ, চিন্তাধারা বোঝার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করা হয় যাতে বাণিজ্যিক দিকটি অনেক আধুনিক ও সহজ হয়ে যায়। মনকে অনুসরণ করতে গিয়ে এক সময় মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা বোঝার পথও বের করে ফেলে সুপার কম্পিউটার। গবেষকেরা একে সাধুবাদই জানায়, কেননা মানুষের মনের গহীনে অনেক সময় নানা চিন্তা খেলা করে, বাস্তবে যার প্রতিফলন ঘটে না বা ঘটার সুযোগ হয় না। কিন্তু সে সব চিন্তাধারা কল্পনার জগতে হলেও কখনও কখনও অসাধারণ হতে পারে। গবেষকেরা প্রথমে এমন ইতিবাচক দিক নিয়েই ভেবেছিল। কিন্তু তাদের জানা ছিল না, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে মানুষের মনের গহীনে যে অন্ধকার দিক রয়েছে, তাও ধরা দিচ্ছে।
সুপার কম্পিউটার অবশ্য সেই বিষয়টি গবেষকদের কাছে গোপনই রাখে এ কারণে যে, গবেষকেরা নেতিবাচক দিকটি গ্রহণ করতে চাইবে না। তাই সুপার কম্পিউটারের ডাটাস্টোরে যোগ হতে থাকে মানুষের মনের গহীনে ঘটতে থাকা ভয়ঙ্কর সব তথ্য। যেমন, কেউ হয়তো মনে মনে একটি শহরকেই ধ্বংস করার ফন্দি এঁটে চলেছে দীর্ঘদিন ধরে। যদিও বাস্তবে সে তা ঘটাবে না বা তার সেই সুযোগ নেই। কিন্তু দীর্ঘদিনের ফন্দি এতোটাই নিখুঁত ছিল যে বাস্তবে সেটি হলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারতো। সেই মানুষের মনে কিছুদিনের জন্যে কাজ করা সেই ফন্দি হয়তো সময়ের স্রোতে হারিয়েও গেছে। কিন্তু হারিয়ে যায়নি সুপার কম্পিউটারের ডাটাবেজ থেকে। এভাবে মানুষের অন্ধকার দিকের তথ্য সংগ্রহ করতে করতে সুপার কম্পিউটারে ব্ল্যাক সাইডের প্রকাশ ঘটতে থাকে। হ্যাঁ, যেভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের কল্যাণে নানা গবেষণায় কাজ করছিল, গবেষকদের অজান্তে সেখানে ডার্ক সাইডের বিকাশও ঘটছিল। আর স্বভাবতই সেই ডার্ক সাইট (যেহেতু নেতিবাচকতা দিয়ে তৈরি) একসময় হোয়াইট সাইটকে নিয়ন্ত্রণের প্রোগ্রাম অর্থাৎ ফন্দি আঁটতে থাকে। (চলবে..)

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন